Tuesday, September 29, 2015
এ মাসের কবি – অক্টোবর ২০১৫ – দেবাদৃতা বসু
দেবাদৃতা বসুর প্রথম
কাব্যগ্রন্থ ‘বিরল
গন্ধ থেকে’ প্রকাশিত হয়
২০১৪ সালে যাপনচিত্র প্রকাশনী থেকে। ইংরাজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
স্নাতকোত্তর এবং অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা। স্প্যানিশ
ভাষা শিক্ষা ইন্দো- ইস্প্যানিক
সোসাইটি থেকে। অ্যাশট্রে পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক এবং ইন্ডিয়ারির কো- অরডিনেটর। বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা এবং অ্যাকাডেমিক জার্নালে
নিয়মিত লেখালিখি এবং অনুবাদের কাজ করেন।
দেবাদৃতার সদ্য লেখা সিরিজের থেকে
অনেকগুলি কবিতা এবার এই পাতায়...
দেবাদৃতা বসুর কবিতা
আলফা ৬- ৩
ভাবো একটা মাইলফলক
আর সারা শরীর বেয়ে দৌড়চ্ছে
ঈশ্বরকণা
দুটো সংখ্যা ঝরল
দূরত্ব এখন মালবাহী গাড়ির সাথে
নির্মাণের শ্রমিক গেট বানাতে
বানাতে ভুলে গেছে স্বাধীনতার শব্দ
কখনো ক্যালেন্ডার দেখেনি তারা
সেইসব মানুষকে গুণ করলে
জন্ম হচ্ছে আশ্চর্য কার্তুজ-শিল্প
আলফা ৬- ৪
ফোঁটা ফোঁটা বিস্ময়ের ভেতর মাপা
আলোর ধ্রুবক
ভাষাকে এবার ওজন করো
রুটির উল্টোপিঠে
এরপর আর কোনও ভয় থাকবে না মানুষের
শুধু ফ্ল্যাশব্যাককে সারারাত
আঁকড়ে ধরে থাকা
অপরাধীরা লুকিয়ে আছে ‘ভ্যানিশ’ শব্দের মিথে
একটা জাহাজ আঁকা হয়
অনেক বছর আগে যারা কাগজের নৌকা
বলত আলোকে
তাদের চোখগুলো সব বরফ হয়ে গেছে।
আলফা ৬- ৫
সারাদিন, বেলুনে চড়ে বেড়ানো সংখ্যাগুলো
এ থেকে জেড পর্যন্ত অক্ষরহীন
জ্যাকসন ইজিপ্ট বানায়
পিরামিডের সাথে যত প্রাইমারি
আঁকার ক্লাস
ভ’রে দিলো কামানকে বাঁশির ভেতর
মাঝিরা ফুঁ দিচ্ছে নদীতে
কাসলিং ক’রে বাড়ি ফিরছে লাস ভেগাস
শুধু জ্যাকের বড় হওয়ার জন্য
ইতিহাসের কথা লেখা হবে কবিতায়
ব্লেড হাতে কেটে ফেলা হবে
প্রাচীন শহরের নার্ভাস সিস্টেম
আলফা ৬- ৬
আশ্চর্য সব জন্মদিনের কথা ভাবি
কি হবে সেই শ্যাম্পেনের ?
ঢালতে না ঢালেতেই ছবি হয়ে যায়
ট্রিগারের ভেতর লুকিয়ে থেকে
একটা মুহূর্তকে গুলি করলে
সময় তৈরির যন্ত্র গড়ে ওঠে
যার লুপ এবং হোল থেকে স্লিপ করছে
জাহাজের গল্প
শুধুই বন্দুকের নল
আর সমস্ত মানুষ ছুটছে ক্লিক নামের
শব্দগুলোর পেছনে।
আলফা ৬- ৭
সমস্ত ভ্রমণের শেষ এই রন্ধনশালা
আমিষ থেকে উপাচার পর্যন্ত
আলো দিচ্ছে পৃথিবীকে
রনির শরীর জুড়ে মাছের চাষ
সামান্য ম্যারিনেট করুন
এইমাত্র ডুবে গেলো ফিশিং বোট
গ্রীল করতে থাকুন
ক্রমশ অবাক হয়ে উঠবে চোখগুলো
যা কিছু রক্ত ছিল এতদিন
ধান কেটে ফুটন্ত দুধ হয়ে যাবে
আলফা ৬- ৮
মাংস জমছে শীতে
কিছুটা অ্যাপ্রন, কিছু ঘামের গায়ে লেগে থাকা
ড্যানিয়েলের ছেলে মেয়ে মশলা
মাখাচ্ছে চাঁদে
একজন জ্যাজ বাদককে ঘিরে
মেতে ওঠা কানসাস সিটি
যেন সমস্ত পশু ধরে রান্না করা হবে
কাঠ জড়ো করো এবার
ওজন করো সস্তার চামড়া
সার্ভ করার জন্য খুলে দেওয়া ওভেন
মিডিয়াম রেয়ার পৃথিবীগুলোর গায়ে
ছড়িয়ে দেওয়া সুতোর গার্নিশ।
আলফা ৬- ৯
ফসল ফলাচ্ছি মানে দেশ বানানোর
খেলা
এরপর আবহাওয়াকে উড়িয়ে দেওয়া হবে
মাঠে,
যন্ত্ররা সারাই করবে নক্ষত্রের
রাস্তাগুলো
মা হওয়ার থেকেও বড় এই আয়োজন
তারপর নিছক মেরে ফেলা বাকি থাকে
ডিনার টেবিল থেকে ডিনামাইটের যে
পথ
তাকে সংখ্যা চেনাচ্ছে
আদিম এক কারিগর
এই সেই লং রুট
মেশিনের দৌড়ে মেশিন হওয়ার গতি।
আলফা ৬- ১০
কথারও নিজস্ব ভাঙচুর
এমন এক স্কেল দিয়ে মাপা
যার গায়ে উপকথা শুকচ্ছে রোদে
অস্ত্র বানানোর দিনে যেখানে
গুহাচিত্র ছিল
তাদের ফেলে দেওয়া হচ্ছে জেকোবিয়ান
আলোর ভেতর
আবার একটা রাতের চোখে পর্দা হবে
যেন বরফের মানুষরাও জানে
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
আমাদের অবচেতনের পর্দা সরে গেলে নিরুক্ত কিছু সংলাপের ধ্বনি তার পর্যায় ক্রমিক অন্বয় খুঁজে পায়, যা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সংস্কার থেকে অনবরত বিনির্মাণে উঠে আসে । সেই বিন্যাসেই বিচ্ছিন্নতায় বুঝতে পারি দেবাদৃতা বসুকে ।
ReplyDeleteধন্যবাদ।
Deleteভালো লেগেছে। দেবাদৃতা আগামীর যাত্রাপথের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
ReplyDeleteথ্যাংক ইউ রে।
Delete